মহাকাব্যিক উপন্যাস (Epic Novel)
সাহিত্যের রূপরীতি
'এপিক' বা মহাকাব্যের বিশাল ও বিস্তৃত পটভূমিকায় রচিত উপন্যাসে মহাকাব্যের মাত্রা বা লক্ষণগুলি ফুটে ওঠে উপন্যাসের আঙ্গিকে—তার ভাববস্তু, কাহিনি-বিন্যাস ও চরিত্র-নির্মাণে। অষ্টাদশ শতকের অগ্রগণ্য ঔপন্যাসিক হেনরি ফিডিং তাঁর উপন্যাসকে বলেছিলেন 'comic epic in prose' : সেও ছিলো মাত্রাগত বিশালত্বে মহাকাব্যোপম উপন্যাস।
শুধু আকার- আয়তনের বিশালতা কিংবা পাত্র-পাত্রীর সংখ্যা দিয়ে মহাকাব্যিক উপন্যাস হিসাবে চিহ্নিত করা করা যায় না ।
যেমন –বিমল করের কড়ি দিয়ে কিনলাম , গৌরিশঙ্কর ভট্টাচার্যের ইস্পাতের
সাক্ষর আয়তনে বিশাল হলেও মহাকাব্যিক উপন্যাস নয়
একটি অখণ্ড কাহিনির মধ্যে একটি দেশ-কাল-জাতির প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র তাতে
উপযুক্ত ভাষা ও ভঙ্গিতে সম্যক প্রতিফলিত হয় ।
যেমন - টলস্টয়ের War and Peace (1863-72)-এ নাগরিক ও গ্রামীণ অভিজাততন্ত্র, কৃষক, সৈনিক, দরবারি পারিষদবর্গ—সকলের জীবনের বিস্তৃত ও বর্ণময়
বৃত্তান্ত এক বিশাল সময়ের পটপ্রেক্ষায় অসামান্য নৈপুণ্যে চিত্রিত করেছিলেন
টলস্টয়।
রবীন্দ্রনাথের গোরা , অন্নদাশঙ্কর রায়ের সত্যাসত্য
বাংলা মহাকাব্যিক উপন্যাসের উদাহরণ ।