লগ্নক কাকে বলে ? লগ্নক কয় প্রকার ? উপধা কাকে বলে ? নির্দেশক কাকে বলে ? বলক কাকে বলে ?
বলক – অনেক সময় আমরা আমাদের বক্তব্যের গুরুত্ত্বকে বাড়ানোর জন্য
অথবা বক্তব্যকে জোরালো করার জন্য কিছু বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ ( শব্দাংশ
) পদের সঙ্গে যুক্ত করি । এই বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছকে বলক বলে।
যেমন – আমি বইটি এখন পড়ব ।
আবার – আমি বইটি এখনই পড়ব। দ্বিতীয় বাক্যে ‘এখনই’ পদের মাধ্যমে বক্তব্য
জোরালো হয়েছে । তাই 'এখনই' পদের শেষাংশের ‘ই' হলো বলকের উদাহরণ।
নির্দেশক - যেসব পরাধীন রূপমূল পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পদকে
নির্দিষ্ট করে, এবং বচন নির্দেশে সাহায্য করে সেগুলোকে
নির্দেশক বা পদাশ্রিত
নির্দেশক বলে।
নির্দেশক দুই প্রকার –
১) একবচনাত্মক নির্দেশক – যে নির্দেশক
সর্বনাম, বিশেষ্য , বিশেষণের পরে যুক্ত হয়ে সেই সব পদকে একবচনের রূপদান করে তাকে একবচনাত্মক নির্দেশক বলে
।
যেমন- টি ,টা , খানা , খানি ইত্যাদি ।
২) বহুবচনাত্মক নির্দেশক – যে নির্দেশক
সর্বনাম, বিশেষ্য , বিশেষণের পরে যুক্ত হয়ে সেই সব পদকে বহুবচনের রূপদান করে তাকে একবচনাত্মক নির্দেশক বলে
।
যেমন- গুলি , গুলা ইত্যাদি ।
প্রত্যয় - যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে, সেই বর্ণ বা বর্ণসমষ্টিকে প্রত্যয় বলে।
প্রত্যয় প্রধানত দুই
প্রকার। যেমন : ১) ধাতু
প্রত্যয় বা কৃৎ প্রত্যয় (২) শব্দ প্রত্যয় বা তদ্ধিত প্রত্যয়।
১. কৃৎপ্রত্যয় :
ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সঙ্গে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি হয় তাকে বলে
কৃৎপ্রত্যয়।
যেমন– কর্তব্য = কৃ + তব্য , বর্তমান = বৃৎ + শানচ্
২. তদ্ধিত প্রত্যয় :
শব্দমূল বা নাম শব্দের সঙ্গে যে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি হয় তাকে বলে
তদ্ধিত প্রত্যয়। যেমন– বুদ্ধিমান = বুদ্ধি + মতুপ
, দাশরথি = দশরথ + ষ্ণি
বিভক্তি: অর্থহীন যে সমস্ত বর্ণ বা
বর্ণগুচ্ছ ধাতু বা শব্দকে পদে পরিণত করে তাকে
বিভক্তি বলে ।
বিভক্তি দুই প্রকার – ১) শব্দ বিভক্তি
(২) ক্রিয়া-বিভক্তি বা ধাতু বিভক্তি
যেমন – আমি সকালে বই পড়ি ।
উপরের উদাহরণে ‘সকালে = সকাল +এ’ ‘এ’
শব্দবিভক্তি । ‘পড়ি = পড়্+ই’ ‘ই’ ধাতুবিভক্তি ।
উপধা – ধাতু বা শব্দের শেষ বর্ণের আগের বর্ণকে উপধা বলে ।
যেমন – ‘ভুজ্’ একটি ধাতু । ধাতুটির বর্ণ বিশ্লেষণ করলে পাই – ভ্ + উ + জ্ । অর্থাৎ এখানে শেষ বর্ণ হল ‘জ্’ , তার আগের বর্ণ
‘উ’ । তাই ‘উ’ হল উপধা ।
লগ্নক - শব্দ পদে পরিণত হওয়ার পর আরও অতিরিক্ত
যে বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ যুক্ত
হয় তাদের লগ্নক বলে ।
লগ্নক দুই প্রকার – ১) সলগ্নক ২) অলগ্নক
বাক্যে যেসব পদে লগ্নক
থাকে সেগুলোকে সলগ্নক পদ এবং যেসব পদে লগ্নক থাকে না সেগুলোকে অলগ্নক পদ বলে।