HEADER ADDS

বিশেষণ পদঃ শ্রেণিবিভাগ ও বিস্তারিত আলোচনা । বিশেষণ কাকে বলে ?

 

 বিশেষণ পদঃ শ্রেণিবিভাগ ও বিস্তারিত আলোচনা । বিশেষণ কাকে বলে ?

 

‘পরাধীন দেশের হে রাজবিদ্রোহী !’

তুমি অধম , তা বলিয়া আমি উত্তম  হইব না কেন ?

অধিক পরিশ্রমী ছাত্ররা জীবনে সফল হয় ।

ভারতীয় সমাজ উচ্ছৃঙ্খলতাকে কোনো দিন মান্যতা দেয় নাই ।

‘বাঁধলে তোমাকে বনস্পতির নিবিড়  পাহারায় ।’

‘তুমি ধীরে প্রবেশিলে’

উপরের উদাহরণগুলিতে স্থূলাক্ষরপদ গুলি  তার পরবর্তীপদগুলির দোশ,গুণ,অবস্থাকে প্রকাশ করেছে ।

বিশেষ্য,সর্বনাম,বিশেষণ ও ক্রিয়াপদের পূর্বে বসে স্থূলাক্ষরপদগুলি তাদের বিশিষ্ট করেছে ।

 

বিশেষণ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ,  গুন, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করেবিশেষণ অন্য পদকে বিশেষ করে বা  বিশিষ্ট করে

 

সাধারণত নাম পদ বা ক্রিয়াপদকে কেমন দিয়ে প্রশ্ন করলে " বিশেষণপদ " পাওয়া যাবে

বিশেষণ  পদের শ্রেণিবিভাগ :

বিশেষণ পদ কে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় -

. নাম বিশেষণ

. ক্রিয়ার বিশেষণ

. বিশেষণের বিশেষণ

কেউ কেউ আবার বিশেষণ পদকে দু-ভাগে ভাগ করার পক্ষপাতী -

. নাম বিশেষণ -

               বিশেষ্যের বিশেষণ

             সর্বনামের বিশেষণ

. ভাববিশেষণ -

             ক্রিয়া বিশেষণ

             বিশেষণের বিশেষেণ

             অব্যয়ের বিশেষণ

 

আরও পড়ুন –

সর্বনামের বিস্তারিত আলোচনা

বিশেষ্যের বিস্তারিত আলোচনা

অব্যয়ের বিস্তারিত আলোচনা

 

 

)  বিশেষ্যের বিশেষণ

যে বিশেষণ পদ কোনো বিশেষ্য পদের  ধর্ম, গুণ, সংখ্যা, পরিমাণ, অবস্থা, ক্রম,  ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষ্যের বিশেষণ বলেবিশেষ্যের বিশেষণ বিশেষ্যকে বিশেষিত করে ।

 

যেমন- প্রভুভক্ত প্রাণী , কনকনে শীত , রাবীন্দ্রীক সাহিত্য , বিদুষী  মহিলা , নীল  আকাশ ইত্যাদি ।

উপরের প্রভুভক্ত, কনকনে, রাবীন্দ্রীক,বিদুষী,নীল  পদ্গুলি প্রাণী, শীত, সাহিত্য , মহিলা, আকাশ পদ্গুলিকে বিশেষিত করেছে । প্রাণী, শীত, সাহিত্য , মহিলা, আকাশ সবকটি পদই বিশেষ্য , তাই এদের বিশেষ্যের বিশেষণ বা নাম বিশেষণ বলে ।

  নাম বিশেষণকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয় –

(ক) সংজ্ঞা বাচক বিশেষণ – সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য থেকে যে বিশেষণ গঠিত হয় ,তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ বলে । সাধারণত সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের পরে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগ করে সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ গঠন করা হয় ।

যেমন – বঙ্গীয় সমাজ , মোগলাই  পরটা , ঢাকাই  তাঁত , গ্রামীণ জীবন ইত্যাদি ।

 

(খ) গুণবাচক বিশেষণ -  যে বিশেষণ বিশেষ্যের গুণ প্রকাশ করে ,তাকে গুণবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন- চালাক ছেলে , সুন্দর দৃশ্য , বুদ্ধিমান বালক , টাটকা খাবার , পরিশ্রমী ছাত্র ইত্যাদি ।

 

(গ) পরিমাণবাচক বিশেষণ – যে বিশেষণ বিশেষ্যের পরিমাণ নির্দেশ করে তাকে পরিমাণবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন-  দুইবিঘা জমি , বিশাল সমুদ্র , অল্প সাহায্য , দ্বিগুন উৎসাহ , আট হাতি কাপড় ইত্যাদি ।

 

(ঘ) সংখ্যাবাচক বিশেষণ – যে বিশেষণপদ বিশেষ্যের সংখ্যা নির্দেশ করে ,তাকে সংখ্যাবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন- তিরিশ দিন , এক হাজার টাকা , হাজার বছর , ছয় মাসের পথ ইত্যাদি ।

 

(ঙ) পূরণবাচক বিশেষণ – যে বিশেষণ দ্বারা কোনো সংখ্যাবাচক বিশেষ্যের ক্রম বোঝায়,তাকে পূরণবাচক বিশেষণ বা ক্রমবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন – একাদশ অধ্যায় , নবম শতাব্দী , প্রথম বর্ষ , পয়লা বৈশাখ , দশম পর্ব ইত্যাদি ।

বাংলায় ম,ইয়,লা,রা,ঠা,ই,শে,এর, র যোগে পূরণবাচক শব্দ গঠন করা হয় ।

[ সংখ্যাবাচক বিশেষণ বিশেষ্যের মোট সংখ্যাকে নির্দেশ করে । অর্থাৎ সামগ্রীকরূপটি প্রকাশ পায় । কিন্তু পূরণবাচক বিশেষণে শুধুমাত্র ক্রম নির্দেশ করে । যেমন- এক ব্যক্তির চার পুত্র । একথা বললে ঐ ব্যক্তির চারটি পুত্রের কথাই বোঝায় । তাই ‘চার’ এখানে সংখ্যাবাচক বিশেষণ । আবার –  শ্যামল ওই ব্যক্তির চতুর্থ পুত্র । একথা বললে ‘চতুর্থ’ শব্দটি চার নাম্বার ক্রমটি নির্দেশ করছে । ] 

সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক বিশেষণের পার্থক্য 

(চ) অবস্থাবাচক বিশেষণ – যে বিশেষণ বিশেষ্যের অবস্থার পরিচয় দেয় ,তাকে অবস্থাবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন- ঘুমন্ত ছেলে , মৃদুমন্দ বাতাস , আহত অভিমান ,  গরিব মানুষ ইত্যাদি ।

 

(ছ) বর্ণবাচক বিশেষণ – যে বিশেষণ বিশেষ্যের বর্ণ প্রকাশ করে তাকে বর্ণবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন – নীল আকাশ , রঙিন চশমা , সাদা বাড়ি , হলুদ পাখি ইত্যাদি ।

 

(জ) উপাদানবাচক বিশেষণ – যে বিশেষণ বিশেষ্যটি কোন উপাদানে গঠিত তা বুঝিয়ে দেয় ,তাকে উপাদানবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন- বেতের চেয়ার , কাঠের টেবিল , মাটির হাঁড়ি , কাঁচের চুড়ি ইত্যাদি ।

 

 

: সর্বনামের বিশেষণ :

যে বিশেষণ পদ কোনো সর্বনাম পদের গুণাগুণ, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে সর্বনামের বিশেষণ বলে সর্বনাম পদ সকল শ্রেণির নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় বলে সর্বনামের বিশেষণ বলতে নাম বিশেষণকেও বোঝায়

যেমন -

মুর্খ তুই কী প্রকারে জানবি ? অলস সে কিছুই করতে পারবে না ।

এই উদাহরণগুলিতে 'মুর্খ' , 'অলস' এই পদ গুলি সর্বনামতুইসেসর্বনাম পদ দুটির গুনাগুন প্রকাশ করছে, তাই এরা সর্বনামের বিশেষণ

: সর্বনামীয় বিশেষণ : 

সর্বনাম পদকে বিশেষণ হিসাবে ব্যবহার করলে তাকে সর্বনামীয় বিশেষণ বলে ।

যেমন :  মদীয় বাসভবন , সেই বালকটি , এই বাগান ইত্যাদি ।

উপরের উদাহরণগুলিতে   মদীয় , সেই , এই সর্বনামপদগুলি বিশেষণের মতো ব্যবহৃত হয়েছে ।

 সর্বনামের বিশেষণ ও সর্বনামীয় বিশেষণের পার্থক্য 

: অব্যয়ের বিশেষণ : 

যখন কোনো অব্যয়পদ নিজে বিশেষণ হিসাবে ব্যবহৃত হয় অথবা কোনো অব্যয় থেকে জাত বিশেষণ অন্য কোনো পদকে বিশেষিত করে তখন তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে ।

যেমন – আচ্ছা বিপদ তো ! ,     বেশ ,এটাই হবে । , উপরি পাওনা , আকস্মিক  আবির্ভাব ইত্যাদি ।

 অবয়ের বিশেষণ ও অব্যয়জাত বিশেষণ এর পার্থক্য জানতে এখানে ক্লিক করুন 

(৫) তদ্ধিতান্ত বিশেষণঃ  বিশেষ্য শব্দের পরে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগ করে যে বিশেষণ পদ গঠন করা হয় তাকে তদ্ধিতান্ত বিশেষণ বলে ।

যেমন- শহুরে জীবন , অর্থনৈতিক সমস্যা , জমিদারি চাল , দার্শনিক বক্তব্য ইত্যাদি ।

 

(৬) কৃদন্ত বিশেষণঃ ধাতুর শেষে কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত করে বিশেষণ পদ গঠন করা হয় ,তাকে কৃদন্ত বিশেষণ বলে ।

যেমন- ঘুমন্ত শিশু , স্মরণীয় ব্যক্তি , ক্রুদ্ধ ফণি , পতিত জমি ইত্যাদি ।

 

(৭) সম্বন্ধ বিশেষণঃ সম্বন্ধ পদের বিভক্তি যোগে গঠিত বিশেষণকে সম্বন্ধ বিশেষণ বলে । সম্বন্ধ বিশেষণ ব্যক্তিবাচক বিশেষ্য বা বস্তুবাচক বিশেষ্যকে বিশেষিত করে ।

যেমন -  গোলাপজলের গন্ধ আমার ভালো লাগে । শীতের সকালে কুয়াশা থাকে ।

(৮) ধ্বন্যাত্মক বিশেষণঃ ধন্যাত্মক অব্যয় যখন বিশেষ্যের দোষ,গুন ,অবস্থা প্রকাশ করে ,তখন তাকে ধ্বন্যাত্মক বিশেষণ বলে ।

যেমন- কনকনে শীত , গনগনে আগুন , ফরফুরে বাতাস , থমথমে ভাব ইত্যাদি ।

(৯) বিধেয় বিশেষণঃ যে বিশেষণ বিধেয় অংশে বসে উদ্দেশ্য অংশের কোনো বিশেষ্যকে বিশেষিত করে তাকে বিধেয় বিশেষণ বলে ।

যেমন –“আঁধার হল মাদার গাছের তলা।” , রাঁচির জলবায়ু স্বাস্থ্যকর ।

 

(১০) বিশেষণের বিশেষণঃ যে বিশেষণ অন্য কোনো বিশেষণের দোষ,গুন,অবস্থা ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে ।

যেমন – টুকটুকে লাল ফুল । , খুব জোরালো বাতাস । , অতি মিস্টি ফল । , হালকা গরম খাবার । ইত্যাদি ।

 

(১১) ক্রিয়াবিশেষণঃ

  যে বিশেষণ কোনো ক্রিয়া বা কাজকে বিশেষিত করে ,তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে ।

ক্রিয়া বিশেষণ ক্রিয়া কখন,কোথায়,কীরূপে ঘটে তা প্রকাশ করে । ক্রিয়ার বিশেষণ সাধারণত ক্লীবলিঙ্গ একবচনান্ত হয় ।

ক্রিয়া বিশেষণ তিন প্রকার হয় –

(ক) অবস্থাবাচক ক্রিয়া বিশেষণ – যে বিশেষণ ক্রিয়ার গুন বা অবস্থা প্রকাশ করে,তাকে অবস্থাবাচক ক্রিয়া বিশেষণ বলে । যেমন – আস্তে আস্তে চলো। , বিষ্টি পড়ে টাপুর-টুপুর । ,  ‘সচকিতে বীরবর দেখিলা সম্মুখে’ ইত্যাদি ।

 

(খ) কালবাচক ক্রিয়া বিশেষণ – যে বিশেষণপদ ক্রিয়া সম্পন্ন হয়ার কাল বা সময় নির্দেশ করে ,তাকে কালবাচক ক্রিয়া বিশেষণ বলে ।

যেমন- সদা সত্য কথা বলিবে । , “এখনি আঁধার হবে বেলাটুকু পোহালে।” , একদা এক রাজা ছিল । ইত্যাদি ।

 

(গ) স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ – যে বিশেষণ ক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার স্থান নির্দেশ করে,তাকে স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ বলে ।

যেমন – “হেথা নয় অন্য কোথা,অন্য কোনখানে ।” , “পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে ।”

 ক্রিয়া বিশেষণের ব্যাখ্যার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

বিশেষণের প্রয়োগ বৈচিত্র –

বিশেষণ পদের গঠন বা উপাদান অনুসারে বিশেষণের বিভিন্ন প্রকার প্রয়োগ বৈচিত্র লক্ষ্য করা যায় –

(১) একপদী বিশেষণ – বিশেষণ পদ একটি মাত্র পদ নিয়ে গঠিত হলে তাকে একপদী বিশেষণ বলে ।

যেমন- ঠান্ডা জল , স্নিগ্ধ বাতাস , গরম দুধ , ভাঙা টেবিল ইত্যাদি ।

 

(২) বহুপদী বিশেষণ – একাধিক পদ মিলে যে বিশেষণ পদ গঠিত হয় ,তাকে বহুপদী বিশেষণ বলে ।

যেমন – সবার পরশে পবিত্র করা তীর্থনীরে । রাত-জাগা পাখিরা বাসায় ফিরছে ।

 

(৩) বাক্যাশ্রয়ী বিশেষণ -  কোনো উপবাক্য যদি কোনো বিশেষ্যকে বিশেষিত করে,তাহলে তাকে বাক্যাশ্রয়ী বিশেষণ বলে ।

যেমন-  আমাদের সব-পেয়েছির-দেশ শান্তিনিকেতন । এরা সব মায়ে-তাড়ানো-বাপে-খেদানো ছেলেরদল ।

 

(৪) লক্ষ্যার্থক বিশেষণ -  যে বিশেষণ আক্ষরিক অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে বিশিষ্টার্থে ব্যবহৃত হয় ,তাকে লক্ষ্যার্থক বিশেষণ বলে ।

যেমন- কাঁচা কাজ । মোটা বুদ্ধি ।

(৫) শব্দদ্বৈতাশ্রয়ী বিশেষণ -  একই শব্দ পর পর দুবার ব্যবহৃত হয়ে যে বিশেষণ হয় ,তাকে শব্দ দ্বৈতাশ্রয়ী বিশেষণ বলে ।

যেমন- টানটান উত্তেজনা । ঝুড়ি ঝুড়ি আম । নিবু নিবু বাতি ইত্যাদি ।

 

(৬) পদান্তরিত বিশেষণ -  বিশেষ্য পদ পদান্তরিত হয়ে বিশেষ্যের দোষ, গুন,অবস্থা প্রকাশ করলে তাকে পদান্তরিত বিশেষণ বলে ।

যেমন- বন্য প্রাণী সংরক্ষণ , পড়ন্ত বেলা , শারদীয় উৎসব ।

 

(৭) প্রশ্নবাচক বিশেষণ -  যে প্রশ্নবাচক শব্দ বিশেষ্যপদের অবস্থা সম্পর্কে  জিজ্ঞাসা করতে ব্যবহৃত হয় ,তাকে প্রশ্নবাচক বিশেষণ বলে ।

যেমন – ওটা কোন  সময়ের কথা ? তুমি কেমন মানুষ ?

 

বিশেষণের তারতম্য

বিশেষণ পদদ্বারা অনেক সময় দুই বা ততোধিক বিশেষ্যপদের গুণ,অবস্থা,পরিমণ ইত্যাদি বিষয়ে একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝান হয় , একে বিশেষণের তারতম্য বলে ।

১) দুই-এর মধ্যে তারতম্য বুঝাতে চেয়ে,থেকে,হইতে,অপেক্ষা ,মধ্যে ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় । আবার অনেকের মধ্যে তারতম্য বুঝাতে সবচেয়ে,সর্বাপেক্ষা,সবথেকে ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় । কিন্তু এতে বিশেষণ পদের কোনো পরিবর্তন হয় না ।

যেমন- রাম অপেক্ষা শ্যাম বুদ্ধিমান ।   প্রশান্ত মহাসাগর সর্বাপেক্ষা বৃহৎ

উদাহরণ দুটিতে বুদ্ধিমান ও বৃহৎ বিশেষণ দুটির কোনো পরিবর্তন হয় নি ।

 

২) দুই-এর গুণের তারতম্য প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিশেষণের পূর্বে একটু,অল্প,কম,অধিক,খুব,বেশি ইত্যাদি বিশেষণের বিশেষণ ব্যবহৃত হয় । কিন্তু বিশেষণের কোনো পরিবর্তন হয় না ।

যেমন – শরৎকাল গ্রীষ্মকাল অপেক্ষা অনেক ভালো ।  সাঁতার কাটা অন্যান্য ব্যায়ামের চেয়ে বেশি  উপকারী ।

 

৩) তৎসম শব্দের বিশেষণ পদের শেষে ‘তর’  ‘তম’  যোগ করে তুলনা বা তারতম্য প্রকাশ করা হয় ।

দুই- এর মধ্যে একের উৎকর্ষ বোঝাতে ‘তর’  এবং অনেকের মধ্যে উৎকর্ষ বোঝাতে ‘তম’  প্রত্যয়ের ব্যবহার করা হয় । বিশেষণ পদটির পরিবর্তন ঘটে ।

 

মূল শব্দ

তর-যুক্ত

তম-যুক্ত

গভীর

গভীরতর

গভীরতম

ক্ষুদ্র

ক্ষুদ্রতর

ক্ষুদ্রতম

সুন্দর

সুন্দরতর

সুন্দরতম

উচ্চ

উচতর

উচ্চতম

হীন

হীনতর

হীনতম

নীচ

নীচতর

নীচতম

বৃহৎ

বৃহত্তর

বৃহত্তম

প্রিয়

প্রিয়তর

প্রিয়তম

মিষ্ট

মিষ্টতর

মিষ্টতম

উজ্জ্বল

উজ্জ্বলতর

উজ্জ্বলতম

 

 

৪) অনেক সময় তৎসম শব্দের শেষে দুই-এর মধ্যে তুলনায় ‘ঈয়স্‌’  এবং অনেকের মধ্যে তুলনায় ‘ইষ্ঠ’  প্রত্যয় যোগ করা হয় ।

 

মূল শব্দ

ঈয়স্‌- যুক্ত

ইষ্ঠ-যুক্ত

গুরু

গরীয়ান্‌ / গরীয়সী (স্ত্রী)

গরিষ্ঠ

বলবৎ

বলীয়ান্‌

বলিষ্ঠ

বৃদ্ধ

বর্ষীয়ান্‌ / বর্ষীয়সী (স্ত্রী)

জ্যেষ্ঠ

যুবা

কনীয়ান্‌

কনিষ্ঠ

লঘু

লঘীয়ান

লঘিষ্ঠ

প্রশস্য

শ্রেয়ান্‌

শ্রেষ্ঠ

বহু

ভূয়ান্‌ (ভূয়সী)

ভূয়িষ্ঠ

মহৎ

মহীয়ান্‌ / মহীয়সী (স্ত্রী)

----

 

কখনো কখনো কিছু কিছু বিশেষণের সঙ্গে ‘তর’ ও ‘ঈয়স্‌’  এবং ‘তম’ ও ‘ইষ্ঠ’  দুই প্রকার প্রত্যয় ব্যবহৃত হয় ।

যেমন – লঘু – লঘুতর /লঘীয়ান্‌  -  লঘুতম/লঘিষ্ঠ

            গুরু – গুরুতর/গরীয়ান্‌  - গুরুতম / গরিষ্ঠ