HEADER ADDS

অর্থানুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ

অর্থানুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ 

অর্থ অনুসারে সাত প্রকার – (১) নির্দেশক বাক্য (২) প্রশ্নবাচক বাক্য (৩) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য (৪) ইচ্ছাবাচক বাক্য (৫) আবেগসূচক বাক্য (৬) সন্দেহবাচক বাক্য   (৭) শর্তসাপেক্ষ বাক্য

উদ্দেশ্য ও বিধেয়

বাক্য গঠনের শর্ত

বাক্যের গঠনগত শ্রেণিবিভাগ 

(১) নির্দেশক বাক্য (Assertive Sentence) –

সংজ্ঞা: যে বাক্যে কোনো বক্তব্য সাধারণভাবে বিবৃত হয় বা নির্দেশিত হয়, তাকে নির্দেশক বাক্য বা বর্ণনাত্মক বাক্য বলে।

যেমন-

১। রামচন্দ্রের অনুগামী হয়েছিলেন তার ত্রাতা লক্ষণ।

২। 'অশনি সংকেত' উপন্যাসে বিভূতিভূষণ মন্বন্তরের চিত্র তুলে ধরেছেন।

৩। সকল প্রকার উন্নতির জন্যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।

৪। অল্প লোকই সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতে পারেন।

৫। বিদ্যাসাগরের নাম প্রত্যেকেই শুনেছে।

অর্থ অনুসারে নির্দেশক বাক্যের প্রকারভেদ: অর্থ অনুসারে নির্দেশক বাক্যকে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

ক) ইতিবাচক বা অন্ত্যর্থক বাক্য

খ) নেতিবাচক বা নস্ত্যর্থক বা নঞর্থক বাক্য

ইতিবাচক বাক্য (Affirmative Sentence):

সংজ্ঞা: যে নির্দেশক বাক্যে বক্তা তার বিবৃতি বা বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করেন, তাকে ইতিবাচক বাক্য বলে।  

যেমন-

১. ভদ্রলোক অতিশয় বিনয়ী।

২. পরিণামে এ লড়াইয়ে তোমাদেরই জয় হবে।

৩. পড়াশুনাই পারে মানুষের মনের অন্ধকার দূর করতে।

৪. বিষয়টি সত্যিই আনন্দের।

৫. ছাত্রজীবনে সময়ের মূল্য অপরিসীম।


নেতিবাচক বা নস্ত্যর্থক বাক্য (Negative Sentence):

সংজ্ঞা: যে নির্দেশক বাক্যে বক্তা তার বিবৃতি বা বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করে এবং অন্যের বক্তব্যকে অস্বীকার করে তখন তাকে নেতিবাচক বাক্য বলে। অন্যভাবে বলা যায়, ক্তা কোনো বিবৃতি বা বক্তব্যকে অস্বীকার করলে তাকে নেতিবাচক নির্দেশক বাক্য বলে। যেমন-

১. কথাটা তুমি সত্যি বলনি।

২. জোর করে নাটক করানো যায় না।

৩. এ বিষয়ে আর কিছুই বলার নেই।

৪. ভালো না লাগলে এসো না।

৫. তা বলে এভাবে অপমান সহ্য করা যায় না।

(২) প্রশ্নবাচক বাক্য : যে বাক্যে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়, তাকে প্রশ্নবাচক বাক্য বলে।

প্রশ্নবাচক বাক্য সাধারণত তিন প্রকার – (ক) হ্যাঁ – না বাচক প্রশ্ন  (খ) বিষয়গত প্রশ্ন   (গ) লগ্ন প্রশ্ন

উদাহরণ: ক.তুমি কি বাড়ি যাবে?

খ. আপনার নিবাস কোথায়?

গ. সে কি কাল আসবে?

 

(৩) অনুজ্ঞাবাচক বাক্য : যে বাক্যে আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ, নিষেধের বোধ প্রকাশ পায় তাকে অনুজ্ঞাবাচক বাক্য বলে।

উদাহরণ: ক.বাড়ি যাও।

খ. নিয়মিত স্কুলে যাবে।

গ. আমার জন্য একটা কলম এনে দিও।

 

(৪) ইচ্ছাবাচক বাক্য বা প্রার্থনাসূচক বাক্য : যে বাক্যে কর্তার ইচ্ছে ব্যক্ত হয়, তাকে ইচ্ছাবাচক বাক্য বলে।

উদাহরণ:

ক. আমার যদি এক লক্ষ টাকা থাকত।

খ. আমার ইচ্ছে সে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকুক।

গ. ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে ।

ঘ. দীর্ঘজীবী হও ।

ঙ. আসন গ্রহণ করুন ।

(৫) আবেগসূচক বাক্য : যে বাক্যে আবেগ, আনন্দ, উচ্ছ্বাস, উল্লাস, বিরক্তি, ভয়, ক্ষোভ ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে।

উদাহরণ:

ক. আহ: কি সুন্দর দৃশ্য!

খ. অ্যাঁ ! কি কা-টাই না করলে!

গ. সাব্বাস! আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।

ঘ. আহা ! কী দেখিলাম , জন্ম জন্মান্তরে দেখিলাম ।

ঙ. ছি ! ছি ! এমন কাজ কেউ করে ?

(৬) সন্দেহবাচক বাক্য   - যে বাক্যের দ্বারা সংশয় , সন্দেহ , দ্বিধা ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাকে সন্দেহবাচক বাক্য বলে ।

এই ধরণের বাক্যে বিভিন্ন সংশয়বাচক অব্যয় ব্যবহৃত হয় । যথা – পাছে , হয়তো , হয়তো বা , যেন , বুঝি , নাকি ইত্যাদি ।

যেমন –

ক. সে হয়তো যাবে ।

খ. “ধ্বনি কাছে ঋণী সে যেয পাছে ধরা পড়ে।”

গ. “শুনতে পেলেম পোস্তা গিয়ে তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে।”

ঘ. “বুঝি কোন দুর্দম বিপূল বিহঙ্গম।”

 

(৭) শর্তসাপেক্ষ বাক্য – যে বাক্যে কার্য ও কারণ থাকে বা ক্রিয়া সংঘটিত হওয়ার শর্ত থাকে তাকে শর্তসাপেক্ষ বাক্য কার্যকারাণাত্মক বাক্য বলে ।

যেমন –

ক. বৃষ্টি পড়লে যাব না ।

খ. যদি সে আসে তাহলে আমি যাবো ।

গ. মেঘ কাটলে সূর্য দেখা যাবে ।

ঘ. না পড়লে ভালো ফল হবে না ।

ঙ. আগে জিনিসটা দাও তবে তো টাকা পাবে ।